শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি॥ মাত্র এক মাসের ব্যবধানে পাল্টে গেছে দক্ষিনাঞ্চলের করোনার চিত্রপট। পুরো আগস্ট যেখানে রোগী ধারনের ঠাই ছিলো না বিভাগের একমাত্র নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে। সেই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে বর্তমানে ৩’শ বেডের মধ্যে ২২৪ টিই ফাঁকা। যারাও ভর্তি রয়েছেন তাদের অনেকে সুস্থ রয়েছেন। ব্যতিক্রম কিছু না ঘটলে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পুরো ওয়ার্ড রোগী শূন্য হওয়ার আশা জাগিয়েছে সংশ্লিষ্টদের মাঝে।
এদিকে, শেবাচিমেরপাশাপাশি করোনা ডেডিকেটেড বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে উপসর্গ ও আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। তাই এরইমধ্যে জেনারেল হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী দক্ষিনাঞ্চলে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গবাহী শুধু রোগী নয়, শূন্যের ঘরে পৌছেছে মৃত্যু হারও।
শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগস্ট মাসের শুরুর দিকে করোনা রোগীর ব্যাপক চাপ ছিল। প্রতিদিন অর্ধশতাধিক রোগী ভর্তি হতো। বেড পরিপূর্ন হয়ে রোগীদের মেঝেতেও থাকতে হয়েছে। কিন্তু আগস্টের শেষ দিকে সংক্রমন নি¤œমুখী হওয়ায় কমতে থাকে রোগীর চাপ। রোগীরা সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছাড়ায় খালি হতে শুরু করে ৩০০ শয্যার এ করোনা ওয়ার্ড। শনিবার এ ওয়ার্ডে ২২৪টি শয্যা ফাঁকা পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সকাল পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
হাসপাতালের পরিচালক কার্যালয়ের সূত্র জানায়, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১১ জন।
একই সময়ে আটজন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন করোনা পজিটিভ। ২০২০ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ৮১ রোগী। এর মধ্যে দুই হাজার ২৭৮ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচ হাজার ৬৪৯ জন। মৃত্যু ঘটেছে ১ হাজার ৩৫৬ জনের। যার মধ্যে করোনা আক্রান্ত ছিলেন ৪১০ জন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালটির পিসিআর ল্যাবে ১৯২টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৭ জনের দেহে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ১৪ শতাংশ।
অপরদিকে, সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, একমাস আগে বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালকে একশ শয্যার পূর্ণাঙ্গ করোনা ডেটিকেটেড হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়। পরে আরো ২০ শয্যা বাড়ানো হয়। তখন থেকে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেয়া হয়। গড়ে প্রতিদিন ৫০ জন আক্রান্ত রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন থাকতো। কিন্তু গত কয়েকদিনে বিভাগে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এখানেও রোগী কমতে থাকে।
তিনি জানান, বর্তমানে হাসপাতালে ২ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাই স্থানীয় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে হাসপাতালের ২২ টি বেডকে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে এবং বাকী বেডগুলোতে সাধারণ রোগীদের ভর্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply